বয়স্ক নাগরিকরা অর্থ ও সচেতনতার অভাবে সময়মত চিকিৎসা সেবা নিতে পারে না। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে স্মৃতিশক্তি হ্রাসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়, পূর্বের চিকিৎসাপত্র ও রিপোর্ট নিজে সংরক্ষণ করতে পারে না। পরীক্ষা নিরীক্ষার কোন তথ্য না থাকার কারনে বর্তমানে ডাক্তার রোগীকে নির্ভুলভাবে চিকিৎসা সেবা দিতে পারেন না। বিধায় নতুন করে বিভিন্ন রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা দেন ফলে রোগীর সময় এবং খরচ বহুগুনে বেড়ে যায়। বিভিন্ন বেসরকারী রোগ নির্ণয় কেন্দ্র গুলোতে রোগ নির্ণয়ের জন্য অতিরিক্ত ফি আদায়ের কারনে বয়স্ক নাগরিকরা রোগ নির্নয় করতে পারেন না। হেলথকার্ড না থাকায় চিকিৎসক পূর্বের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনও তথ্য জানতে না পারা। ডাক্তারদের অতিরিক্ত ফি আদায় এর কারণে সিনিয়র নাগরিকরা নিয়মিত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয় এবং বেসরকারী রোগ নির্ণয় কেন্দ্রে অতিরিক্ত ফি এর কারণে রোগ নির্ণয় করতে পারে না।
বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে ৬০ উর্দ্ধ সিনিয়র নাগরিকদের তালিকা করে তাদের জন্য একটা স্বতন্ত্র ডাটাবেজ সফটওয়ার তৈরী করা হবে। এই ডাটাবেজে সিনিয়র নাগরিকদের নাম, পিতার নাম, ঠিকানা, রক্তের গ্রুপ, পূর্বে কি কি রোগ ছিল, তার পরিবারের কারো কোন জটিল রোগ ছিল কিনা, ফিঙ্গার প্রিন্ট, একটি স্মার্ট আইডি এবং উক্ত ব্যক্তির ছবিসহ যাবতীয় ডাটা এই ডাটাবেজে সংরক্ষণ থাকবে। ডাটাবেজ তৈরীর পর প্রত্যেক সিনিয়র নাগরিককে তার স্মার্ট আইডির আলোকে তাকে একটি স্মার্ট কার্ড প্রদান করা হবে। প্রত্যেক সিনিয়র নাগরিককে প্রতি দুই মাস অন্তর বডি চেকআপ করা হবে। এছাড়া উক্ত ব্যক্তিরা যখনই অসুস্থতা অনুভব করলে তখনই পৌরসভায় এসে ডাক্তার দেখাতে পারবে। কাজটি দীর্ঘ মেয়াদী করার লক্ষ্যে সম্পূর্ণ ডাটাবেজ সফটওয়ারটির জন্য একটি সার্ভার স্থাপন করা হবে। সিনিয়র নাগরিকগণ প্রতি দুই মাস অন্তর একটি করে শুভেচ্ছা ও মঙ্গল কামনা ম্যাসেজ পাবে। যাদের মোবাইল ফোন নাই তাদের আলাদাভাবে চিঠির মাধ্যমে জানানো হবে। সাথে সাথে ঐ ম্যাসেজে তাকে তার বডি চেকআপের তারিখ ও সময় জানিয়ে দেওয়া হবে। সিনিয়র নাগরিকগণ পৌরসভার ডাক্তারের কাছে আসলেই মেডিকেল এ্যাসিসেন্ট তার ব্লাড প্রেশার পরীক্ষা করে একটি টোকেন নং দিয়ে ডাক্তারের কাছে প্রেরণ করবে। ডাক্তার রোগীর কাছ থেকে স্মার্ট কার্ড নিয়ে কার্ড রিডার মেশিনে ইনপুট করেই রোগীর যাবতীয় তথ্য দেখা যাবে। যদি কোন রোগীর স্মার্ট কার্ডটিতে সমস্যা থাকে অথবা হারিয়ে যায় তাহলে তার হাতে ফিঙ্গার প্রিন্ট রিডিং এর মাধ্যমে তার তথ্য দেখতে পাবে। পূর্বের তথ্য এবং রোগীর মুখের কথা শুনে ডাক্তার কম্পিউটারে রোগীর প্রেসক্রিপশন করতে পারবে, এক কপি প্রিন্ট করে রোগীকে দেন এবং সাথে সাথে কম্পিউটারে সংরক্ষণ করা হবে, যা ভবিষ্যতের জন্য গচ্ছিত থাকবে। এরপর যখন ঐ রোগী আসবেন তার কাছে প্রেসক্রিপশন থাক বা না থাক কম্পিউটারে রোগীর কার্ড পাঞ্চ করলেই পূর্বের সব তথ্যসহ আগের প্রেসক্রিপশন ও সকল পরীক্ষা নিরীক্ষার তথ্য পাওয়া যাবে।২ মাস অন্তর অন্তর রুটিন সেবা ছাড়াও সিনিয়র নাগরিকরা তাদের প্রয়োজনে যে কোনও দিন সিরিয়াল ছাড়া চিকিৎসা সেবা নিতে পারবে।