<p><span style="color: rgb(88, 102, 110); text-align: justify;">সমস্যা কচুরিপানার অর্কিড-সদৃশ ফুলের সৌন্দর্যপ্রেমিক এক ব্রাজিলীয় পর্যটক ১৮শ' শতাব্দীর শেষভাগে বাংলায় কচুরিপানা নিয়ে আসেন। তারপর তা এতো দ্রুত বিস্তার লাভ করে যে, ১৯২০ সালের মধ্যে বাংলার প্রায় প্রতিটি জলাশয় কচুরিপানায় ভরে যায়। নদ-নদীতে চলাচল আর জলাভূমিতে ফসল চাষ অসম্ভব হয়ে পড়ে, ফলে বাংলার অর্থনীতিতে স্থবিরতা দেখা দেয়। এমত পরিস্থিতিতে সরকার কচুরিপানার আইন জারি করে, যার মাধ্যমে বাড়ির আশেপাশে কচুরিপানা রাখা নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। আক্রান্ত এলাকার ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটরা তাদের নিজ নিজ এলাকায় স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে কচুরিপানা দমনে জোরদার অভিযান চালান। কিন্তু আজো কচুরিপানার অভিশাপ থেকে বাংলাকে মুক্ত করা সম্ভব হয়নি।</span><br></p><div><span style="color: rgb(88, 102, 110); text-align: justify;"><br></span></div>
<p><span style="color: rgb(88, 102, 110); text-align: justify;">বিবরণ এই সমস্যকে সম্ভাবনায় রূপ দেওয়ার জন্য কচুরিপানাকে কিভাবে ব্যবহার উপযোগী করা যায় সে-চিন্তা থেকে আমি (সাইদ হাফিজ) গত অর্ধযুগ ধরে গবেষণা করি এবং অভাবনীয় ফল পাই। আমি প্রমাণ করেছি কচুরিপানা দিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে জৈবসার, বায়োগ্যাস, দড়ি, কাগজ, কাপড় ও ফাইবার থেকে প্রায় পনেরো হাজার পণ্য তৈরি করা সম্ভব। এছাড়া যাবতীয় ফার্নিচার ও নানা রকম নিত্যব্যবহার্য পণ্য সম্পূর্ণ হাতেতৈরী করা যায়। যেমনঃ ভেনেটি ব্যাগ, হ্যান্ডব্যাগ, ঘরে পরার স্যন্ডেল, নানা রকমের টেবিল ম্যাট, ঝুড়ি, ফুলদানি আসবাবপত্র (টেবিল, চেয়ার, সোফা), মাথার হ্যাট, ফ্রুটস বাস্কেট, পাপোশ, ফুলদানি, পেন হোল্ডার, শিকা, হাঁড়ি, কাপ-পিরিচ সহ আরো নানা রকম জিনিস। বাংলাদেশে এ বিষয়টি প্রথম এবং বাংলাদেশের কুটিরশিল্পে একটি নতুন সংযোজন। আমার এ উদ্ভাবনে কচুরিপানাকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় ফাইবার(সূতা) তৈরি করে তাকে ছত্রাকমুক্ত রাখার ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়। তারপর খুব কম খরচে হাতেই এসব পণ্য তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমি ৫০ প্রকার পণ্য তৈরি করেছি এবং এই কাজ করে দশ জন স্বাবলম্বী হয়েছেন। সুদৃশ্য এইসব পণ্যের চাহিদা রয়েছে সারা বিশ্বে। এসব পণ্য আমাদের কুটিরশিল্পকে সমৃদ্ধ করবে বলে আমার বিশ্বাস। কচুরিপানা শিল্পের বিকাশ ঘটলে একই সাথে যেমন পরিবেশ রক্ষা পাবে তেমনি সৃষ্টি হবে হাজারো বেকারের কর্মসংস্থান। এরই সাথে এটি হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। এর জন্য প্রয়োজন সরকারি অর্থনৈতিক সহযোগ ও সকলের অনুপ্রেরণা</span><br></p><div><span style="color: rgb(88, 102, 110); text-align: justify;"><br></span></div>